সৈয়দপুরে নতুন নিয়মে ট্রেনের টিকেট কিনতে এখনো যাত্রীদের কমেনি ভোগান্তি

ট্রেনের টিকিট কেনার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহ পুর্বে এই ব্যবস্থা কার্যকর হলেও নতুন নিয়মে টিকিট কাটতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সৈয়দপুরে ট্রেন যাত্রীদের। রেজিস্ট্রেশন করতে না পেরে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই। সার্ভার জটিলতার কারণে ধীরগতিতে চলছে টিকিট বিক্রি। এদিকে যাত্রীরা ঠিকমতো টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছেন কিনা তা তদারকি করছেনা স্থানীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ ট্রেনের টিকেট কাটতে আসা বেশিরভাগ যাত্রীদের।
তাঁরা বলেন,স্টেশনের যাত্রীদের জন্য আলাদা একটি রেজিস্টেশন কাউন্টার থাকার কথা থাকলেও তা এখনো বসানো হয়নি। তাছাড়া নেই কোন তথ্য সেবা কেন্দ্র।
জানা যায়, ভৌগলিক কারণে সৈয়দপুর উত্তরাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন।সৈয়দপুর ছাড়াও রংপুরের তারাগঞ্জ, ঠাকুরগাঁ, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারীসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন এ রুটে যাতায়াত করে। এখান থেকে প্রতিদিন ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনারুটে ৫টি আন্তঃনগর ও একটি মেইল ট্রেন চলাচলা করে। যাত্রীসেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘টিকেট যার, ভ্রমণ তার’ স্লোগানকে সামনে রেখে গত ১ মার্চ থেকে ট্রেনের টিকিট কেনার ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু টিকিট কেনার নতুন নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত না জানায় এ স্টেশনে এসে বিপাকে পড়ছেন অনেকে। সোমবার স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, মুঠোফোন ও এনআইডি না নিয়ে টিকিট কাউন্টারে এসে অনেকেই বিড়ম্বনায় পড়ছেন। অনেকে আবার ঠিকমতো নিবন্ধন করতে পারছেন না। আবার নিবন্ধন হতে দেরি হওয়ায় অনেকেই সঠিক সময়ে ট্রেন ধরতে পারছেন না। অনেক বয়স্ক যাত্রী নতুন নিয়মে টিকিট কাটার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণাই রাখেন না। তারাই বেশি বিপদে পড়েছেন।
নতুন নিয়ম চালু হওয়ায় স্টেশনে যাত্রীদের জন্য আলাদা একটি রেজিস্ট্রেশন বুথের কথা থাকলেও সেটি বসানো হয়নি।

ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা করেও টিকিট পাননি ইসরাত পারভীন । তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমার এনআইডি দিয়ে চেষ্টা করেছি কিন্তু ইনভ্যালিড দেখায়। এরপর আমার স্বামীর নাম্বার দিয়ে চেষ্টা করছি, কিন্তু সেটিও ইনভ্যালিড দেখায়। কাউন্টারে গিয়ে অনুরোধ করলে তারা বলেন এসএমএস না আসলে টিকিট পাওয়া যাবে না।’

খুলনা যাওয়ার উদ্দেশ্যে রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার আতিকুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী। তিনি বলেন, হামার তো মোবাইল নাই। আইডি কার্ডখান ভুল আছিল ওইখান দুইমাস আগে নির্বাচন অফিসোত ঠিক করির দিছি। এলাও পাও নাই। তাই টিকিট কাটির পায়ছি না। খুলনা বেটির বাড়িত যাবার নাগিবে। স্টেশনে আসিয়া মুই কী বিপদোত পড়নু। কেনকা করি বেটির বাড়ি যাব এলাই।

আসলাম হোসেন নামে আরেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, বারবার চেষ্টা করেও নিবন্ধনের ফিরতি মেসেজ পাইনি। গত রোববার একটি কম্পিউটার দোকান থেকে রেজিস্ট্রেশন করেছি। কিন্তু সোমবার দুপুর হয়ে গেল ফিরতি মেসেজ পাইনি। এ কারণে টিকিট কাটতেও পারছি না।’

সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ওবাইদুল ইসলাম রতন বলেন, ‘ এটি নতুন পদ্ধতি তাই কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে স্টেশনে যাত্রীদের সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, অনলাইনে ঢুকে যাত্রীরা নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিজেই টিকিট কাটতে পারছেন। অন্য কারও টিকিট কাটার সুযোগ নেই।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *