যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ‘বাণিজ্য চুক্তি’ ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ওয়াশিংটন ও লন্ডন সূত্রে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। যা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক-নীতি ও বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির ব্যাপ্তি হবে সীমিত এবং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তির কাঠামো মাত্র।

গত ২ এপ্রিল ‘লিবারেশন ডে’ হিসেবে ঘোষণা করে ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।

যদিও অনেক দেশকে এই শুল্ক থেকে সাময়িক ছাড় দেওয়া হয়েছে আলোচনার পথ খোলা রাখতে। এই শুল্ক প্রয়োগের পর এটিই হবে প্রথম কোনো আনুষ্ঠানিক বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা। ট্রাম্প বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘একটি বড় ও সম্মানিত দেশের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ঘোষণা করা হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এটি যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি কাঠামোগত চুক্তি হতে পারে, যার বিস্তারিত ভবিষ্যতের আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

ট্রাম্প স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়) ওভাল অফিসে সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেবেন। লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনার বিষয়ে আজ একটি হালনাগাদ তথ্য দেবেন। এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আলোচনা দ্রুত এগোচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী আজই বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন।’

স্টারমার ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটন সফরের সময় থেকেই এই চুক্তির বিষয়ে সক্রিয় ছিলেন।

ট্রাম্পের মতো তিনিও ২০২৪ সালে ক্ষমতায় আসেন। সফরের সময় ট্রাম্প তাকে ‘কঠিন আলোচক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘একটি দারুণ চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।’
চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যের কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাস করতে পারে এবং বিনিময়ে যুক্তরাজ্য প্রযুক্তি জায়ান্টদের ওপর আরোপিত ডিজিটাল সার্ভিস কর তুলে নিতে পারে।

কিংস কলেজ লন্ডনের অর্থনীতিবিদ জোনাথন পোর্টেস মনে করেন, ‘এই চুক্তি মূলত ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা। সামান্য শুল্ক কমলেও ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ থাকবেই। ট্রাম্প বহুবার ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রশংসা করেছেন এবং স্কটল্যান্ডে তার পারিবারিক ইতিহাস ও গলফ কোর্স রয়েছে। স্টারমারের সাম্প্রতিক সফরে ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো রাজকীয় সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা দুই দেশের কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতাকে আরো দৃঢ় করতে পারে।

চূড়ান্ত চুক্তি না হলেও এই কাঠামো ঘোষণা বৈশ্বিক বাণিজ্য রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে যাচ্ছে—বিশেষ করে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে সম্ভাব্য শুল্ক যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *