বাগেরহাটে উপজেলা কমিটির অনুমতি ছাড়া স্কুলের গাছ কেটে আত্মসাতের অভিযোগ

বাগেরহাটে আবার ও উপজেলা কমিটির অনুমোদন ছাড়া গাছকেটে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে ফকিরহাট কাজী আঃ হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক সর্দার হাফিজুর রহমানের বিরুদ্বে। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দাবী স্কুল পরিচালনা কমিটির রেজুলেশন করে গাছকাটা হয়েছে। পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এবিষয় কিছুই জানেন না দাবী তাদের।
এলাকাবাসী জানান, বুধবার সন্ধায় কয়একজন লেবার এসে বিদ্যালয়ের লেকের পাড়ের একটি বড় মেহেগুনী গাছকেটে মিলে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী জানতে চাইলে তারা বলে প্রধান শিক্ষক আমাদের কাছে গাছটি বিক্রিকরে দিয়েছে। এবিষয় এলাকাবাসী সাংবাদিকদের জানালে ৩ আগষ্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় এ প্রতিবেদক স্কুলে যায়। স্কুলে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে ফোনে কথাহলে তিনি জানান, উপজেলা চেয়ারম্যনের অফিস রুমে আছি আপনি এখানে আসেন গাছের বিষয় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান সব জানে।
এসময় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সৈয়দ শাহ এলান বলেন, আমি বুধবার বিকাল ৪ টা ১০ মিঃ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ছিলাম এর মধ্যে আমাদের বিদ্যালয়ের কোন গাছ কাটা হয়নি। আমার জানা মতে গাছ কর্তনের বিষয়ে কোন মিটিং হয়নি। আপনাদের কাছথেকে প্রথম শুনলাম যে, আমাদের বিদ্যালয়ের একটি মেহেগুনী গাছ কাটা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য শিক্ষক প্রতিনিধি নিলয় রায় চৌধুরী বলেন, আমার উপস্থিতিতে গাছ কাটা সংক্রান্ত কোন সভা হয়নি। আমি এই প্রথম আপনাদের কাছ থেকে জানলাম যে, বিদ্যালয়ের একটি গাছ কাটা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ৭/৮ মাস আগে এই বিদ্যালয়ের ৩ টি বড় মেহেগুনী গাছ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমোতি ছাড়া কর্তন করে ৭৫হাজার টাকায় ইউপি সদস্য মিজান এর কাছে বিক্রি করা হয়েছিল । এসময় ও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এবিষয়ে কাজী আঃ হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফকিরহাট সদর ইউপি চেয়ারম্যান শিরিনা আক্তার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী রেজুলেশন করে গাছ কর্তন করা হয়েছে।
এদিকে ৩ আগষ্ট বিকাল ৪ টায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন গত ১৭ জুলাই পরিচালনা পরিষদের এক সভার সিদ্ধন্ত অনুযায়ী গাছটি কর্তন করা হয়েছে। কর্তন করা গাছদিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের বেঞ্চ তৈরী করা হবে। এই সভায় ১১ জন সদস্য উপস্থিত ছিল । আর সভায় সহকারী প্রধান শিক্ষক সৈয়দ শাহ এলান কে আহবায়ক করে বেঞ্চ তৈরী করার একটি কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে বেঞ্চ তৈরী করার আহবায়ক করা হয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক সৈয়দ শাহ এলান কে অথচ ১৮ দিন পার হলেও আহবায়ক ই জানেনা সে এই কমিটির আহবায়ক। অপরদিকে পরিচালনা পরিষদের সদস্য শিক্ষক প্রতিনিধি নিলয় রায় চৌধুরী ১৭ জুলাই সভা হয়েছে তিনি জানেন না অথচ তার স্বাক্ষর আছে এই সভার রেজুলেশনে।

এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহিদুর রহমান জানান, আমি অল্প কয়েকদিন আসছি এবিষয়ে ভাল বলতে পারবো না। তবে বিদ্যালয়ের যে কোন গাছ কাটকে হলে ২০০৩ সালের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে সভাপতি করে ৪ সদস্য একটি কমিটি আছে যার অনুমতি নিয়ে গাছ কর্তন করতে হবে।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফা বেগম নেলী এবিষয়ে বলেন, কাজী আঃ হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গাছ কর্তনের কোন আবেদন বা বিদ্যালয় থেকে কোন রেজুলেশন আমার কাছে আসে নাই আর আমি কোন গাছ কর্তনের অনুমোতি দি নাই। তবে শেখ তারিকুল ইসলাম নামে এক ব্যাক্তি কাজী আঃ হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গাছ কাটার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে । আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছি। প্রতিবেদন হাতে আসলেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *