পঞ্চগড়ে চা বাগান মালিক সমিতির মানববন্ধন
পঞ্চগড় প্রতিনিধি || ৯:৪৩ অপরাহ্ণ ॥ জুন ৪, ২০২৩
জাতীয় চা দিবসে পঞ্চগড়ে কাঁচা চা পাতার সর্বনিম্ন মূল্য ৪০ টাকা নির্ধারণসহ ৯ দফা দাবি আদায়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে চা বাগান মালিক সমিতি।
রোববার সকালে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে ঘন্টাব্যাপী ওই কর্মসূচি পালন করে তারা। মানববন্ধনে চা বাগান মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মানিক খান, চা বাগান মালিক আনিসুজ্জামান নতুন, রফিকুল ইসলাম, আজাহারুল ইসলাম, মো. আব্দুল্যাহ, এস এম নাহিদসহ বাগান মালিকরা বক্তব্য দেন।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গড়া সমতলের চা বাগান থেকে প্রতিবছর রেকর্ড পরিমানে চা উৎপাদন হলেও চা চাষিদের অবস্থা এখন খুবই শোচনীয়। চা কারখানা মালিকরা সিন্ডিকেট করে পাতা কেনার কারণে নির্ধারিত দামের অর্ধেকও পাচ্ছে না বাগান মালিকরা। অথচ গত বছরের তুলনায় এবার সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। তারা রশিদে সব পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ করে কোম্পানির সীল স্বাক্ষর প্রদান, পঞ্চগড়ের চায়ের মান খারাপ হওয়ার কারনের সাথে জড়িত ম‚ল হোতাদের মুখোশ উন্মোচন, বøাক মার্কেটে ভালো মানের চা বিক্রি বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পর্যাপ্ত পদক্ষেপ চান তারা। ভরা মৌসুম কারখানা রেশনিংভাবে চালু রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করে প্রত্যেক কারখানার অন্তত ৫০% ক্যাপাসিটি প্রতিদিন রাখার এবং পঞ্চগড়ে সরকারিভাবে চা ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান চা বাগান মালিক সমিতি।
চা বাগান মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল আলম বলেন, চা কারখানা মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে চা বাগান মালিকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কমিটির নির্ধারিত দামের অর্ধেক দামও পাচ্ছে না বাগান মালিকরা। অধিকাংশ চা বাগান মালিক ঋণে জর্জরিত। ক্ষোভে অনেকে চা গাছ কেটে ফেলছেন। কাঁচা চা পাতার মূল্য প্রতিকেজি ৪০ টাকা করা না হলে পঞ্চগড়সহ উত্তরের চা শিল্পে অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে। চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে অনুরোধ তিনি যেন দ্রæত পঞ্চগড়ে এসে চা বাগান মালিক ও কারখানা মালিকসহ সকল পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেন। তা না হলে সম্ভাবনাময় উত্তরের চা শিল্পের অবস্থা চিনি শিল্পের মত অবস্থা হবে।
পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন, গত বছর জেলায় এক কোটি ৭৭ লাখ ৭৯ হাজার কেজি চা উৎপন্ন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৬০ কোটি টাকা। দেশে মোট উৎপাদিত চায়ের ১৯ শতাংশ চা পঞ্চগড়ে উৎপাদিত হয়েছে। এবার দুই কোটি কেজি চা উৎপন্ন হবে বলে আশা করছেন চা সংশ্লিষ্টরা। এবার দুই কোটি কেজি চা উৎপন্ন হবে বলে আশা করছেন চা সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে নিবন্ধিত চা বাগান ৯ টি, অনিবন্ধিত ২১ টি এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান আট হাজার ৩৫৫ টি, নিবন্ধিত দুই হাজার ৫৩ টিতে ১২ হাজার ৭৯ একর জমিতে চায়ের আবাদ হয়েছে। চা চাষিরা তাদের উৎপাদিত পাতার ন্যায্যমূল্য না পেলে আগামিতে নতুন চা আবাদ বাধাগ্রস্থ হতে পারে বলে তিনি আশংকা করেছেন।