ঢাকা রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৫ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বিভাগসমূহ

মতলবে একই পরিবারের ৮জন হত্যার ২৬ বছর আজ

সুমন আহমেদ : || ৪:৩৯ অপরাহ্ণ ॥ মে ২৮, ২০২৩

মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার জোড়খালী গ্রামে একই পরিবারের ৮ হত্যার ২৬ বছর আজ। দেখতে দেখতে এতটি বছর কেটে গেলেও আজও থামেনি স্বজনের কান্না।
১৯৯৭ সালে জমি সংক্রান্ত বিরোধীতায় একই পরিবারের ৮ জনকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজ ২৯ মে রবিবার ২০২২ ইং নৃশংস হত্যার ইতিহাসের কলঙ্কিত ২৬ বছর আজ। ঐ পরিবারের বেঁচে থাকা একমাত্র সদস্য মাজেদা সহ স্বজনের কান্না থামেনি আজও।
জানা যায়, উপজেলার জোড়খালী গ্রামের প্রধান বাড়িতে ছালামত প্রধানের সাথে একই বাড়ির হযরত আলী মিস্ত্রীর সাথে ৫ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ ছিল।সেই বিরোধের জের ধরে ২৯ মে ১৯৯৭ সালের গভীর রাতে ছালামত প্রধান, তৎকালীন স্থানীয় ইউপি সদস্য সফিউল্লাহ ভূইয়া, তার ছেলে মানিক ভূইয়া, আদম আলী প্রধান, হাবিব উল্লাহ ভূইয়া, আলী আজ্জম ও তার স্ত্রী ভানু বেগম, মন্টু মিয়া,মুজাম্মেল প্রধানসহ আরো কয়েকজন মিলে ৭ জনকে হত্যা করে।এরা হলেন, হযরত আলী মিস্ত্রী ও তার স্ত্রী, ছেলে হুমায়ুন ও তার স্ত্রী,ছেলে সোহাগ, মেয়ে সাজেদা, মনি আক্তার এই ৭ জন। এদের মধ্যে হুমায়ুনের স্ত্রীর গর্ভে থাকা ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সন্তান ছিলো এই মিলে হত্যা হয় ৮ টি।
ঘটনার দিন ঐ পরিবারের বেঁচে থাকা একমাত্র সদস্য হযরত আলী মিস্ত্রীর মেয়ে মাজেদা আক্তার ঢাকা থাকায় সে প্রানে রক্ষা পায়।
পরে সে বাড়িতে এসে ছালামত প্রধান ও তার স্ত্রী ওয়াহেদুন্নেছা, ইউপি মেম্বার সফিউল্লাহ ভূইয়া ,ছেলে মানিক ভূইয়া,আলী আজ্জম ও তার স্ত্রী ভানু বেগম, আদম আলী, হাবিব উল্লাহ ভূইয়া, মন্টু মিয়া, মোজাম্মেল হকসহ আরো কয়েকজনকে আসামি করে মতলব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলায় ছালামত প্রধান, ইউপি সদস্য সফিউল্লাহ ভূইয়া,আলী আজম এই ৩ জনের ফাঁসির রায় হয়।

মন্টু মিয়া, মানিক ভূইয়া, হাবিব উল্লাহ ভূইয়া, ভানু বেগম, ওয়াহেদুননেছা, মুজাম্মেল মিয়া যাবৎজীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়।
এদের মধ্যে মামলার প্রধান আসামি ছালামত প্রধান আত্মসমর্পন করলে বিচারক তার জামিন না মন্জুর করেন। পরে জেল হাজতে থাকাকালীন অবস্থায় সে মারা যায়।
ছালামত প্রধানের মৃত্যুর পর তার তার স্ত্রী ওয়াহেদুন্নেছা কাশিমপুর কারাগারে থেকে অন্ধ হয়ে যায়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির সুরেন্দ্র কুমার সিনহা কারাগার পরিদর্শনে গেলে তার এ অবস্থা দেখে ও বার্ধক্যজনিত কারনে প্রান ভিক্ষা করে দেয়। ঢাকায় ছেলেদের বাসায় থাকলে ও লজ্জায় আর বাড়ি আসে না। ইউপি সদস্য সফিউল্লাহ ভূইয়া কারাগারেই মৃত্যু বরন করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আলী আজ্জম ও মন্টু কারাগারে মৃত্যু হয়েছে। আলী আজ্জমের স্ত্রী ভানু বেগম এখনো কারাগারে, যাবজ্জীবন কারা ভোগ করে মুক্তি পেয়েছেন মোজাম্মেল প্রধান।

হাবিব উল্লাহ ভূইয়া ও মানিক ভূইয়ার যাবৎজীবন কারাদণ্ড হলেও এখনো তারা পলাতক রয়েছে। তবে রাতের আধারে এখনো স্বজনদের সাথে দেখা করতে মাঝে মধ্যে বাড়ি আসে বলে জানা গেছে।
এ দিকে ৮ হত্যা পরিবারের বেঁচে থাকা একমাত্র সদস্য মাজেদার কান্না আজও থামেনি। প্রতি বছর এই দিনটি আসলে মনে পরে যায় নৃশংস সেই বর্বরোচিত ঘটনার কথা। এই মামলায় ছালামতের স্ত্রী ওয়াহেদুন্নেছা প্রান ভিক্ষা পাওয়ায় এবং যাবৎজীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি হাবিব উল্লাহ ভূইয়া ও মানিক ভূইয়া এখনো পলাতক থাকায় হতাস তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

সম্পাদক ও প্রকাশক

মো: আক্কাছ আলী

বার্তা অফিস: ময়মনসিংহ, ভালুকা

ওয়েবসাইট: www.prothomdesh.com

ইমেইল: prothomdeshbd@gmail.com

উপদেষ্টা সম্পাদক

শিকান্দার ফয়েজ

বার্তা অফিস: হাউজ নং: ১৩৫, শ্যামলাসী, টোটালিয়া পাড়া, সাভার ঢাকা

ওয়েবসাইট: www.prothomdesh.com

ইমেইল: prothomdeshbd@gmail.com