বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করলো নুরে আলম

ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে পাঠানোর নামে দাউদকান্দির চার ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা সর্বস্ব হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন।
প্রতারণার শিকার ওই চার ব্যক্তি হলেন দাউদকান্দি উপজেলার কাউয়াদি গ্রামের আজাদ হোসেন ও তাঁর বড় ভাই রুহুল আমিন, একই গ্রামের মো. জয়নাল এবং পাশের গ্রাম উত্তর আনোয়ারপুর গ্রামের আবুল কালাম।

এলাকায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। পরে পাওনা টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগীরা সম্প্রতি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বাইগারচর গ্রামের মৃত্যু ফয়েজ প্রধানের পুত্র নুরে আলমের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করেছেন।
মামলার আরজি ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভালো বেতনের চাকরি ও সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে কাতার পাঠানোর কথা বলে নুরে আলম চারজনের কাছ থেকে কয়েক কিস্তিতে ১০ লাখ টাকা নেন। এর মধ্যে আজাদ ও তাঁর ভাই রুহুল আমিনের কাছ থেকে সাড়ে ২ লাখ করে এবং জয়নাল ও আবুল কালামের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা করে নেন।
কাতার যাওয়ার জন্য প্রত্যেককে ৪ লক্ষ ৫০ করে দিতে হবে বলে জানান নুরে আলম।

দুই ভাইয়ের বাকি টাকা ভিসা পাওয়ার পর দেওয়ার কথা থাকলেও তাঁদের আগেই ভিসা দেওয়া হয়। পরে তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন সেটি জাল (নকল) ভিসা। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ভুক্তভোগীরা তাঁদের টাকা ফেরত চান। এর পর থেকে নুরে আলম তাঁদের বিদেশে পাঠানোর কথা বলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিসও হয়।
আজাদ ও রুহুল আমিন বলেন, বিদেশে যাওয়ার জন্য জমি বিক্রি ও বন্ধক রেখে এবং এনজিও থেকে সুদে টাকা নিয়ে তাঁরা দুই ভাই ৪ লাখ টাকা দিয়েছেন। এখন সুদের টাকা পরিশোধ করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সংসারের খরচ মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

পরর্বতীতে নুরে আলম দীর্ঘ দিন পালিয়ে থেকে সকলের টাকা পরিশোধ না করে নিজেই কাতার চলে যান। নুরে আলমের প্রতিবেশীরা জানান, নুরে আলম আগে ঢাকায় একটা মুদির দোকানে চাকুরি করতো, সেই মালিকের ৩ লক্ষ টাকা চুরি করে বাড়ীতে চলে আসে। সেই টাকা ফেরৎ নেওয়ার জন্য অনেক সালিস বৈঠক হয়েছে, নুরে আলমের পাশের গ্রাম ঘাসিরচরে কয়েকবার চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পরেছে। গ্রামে চুরি করার কারনে গ্রাম থেকে বিতারিত ও করা হয়েছিলো। নুরে আলম ছোট থেকেই চুরি ও বাটপারি করে আসতো, এলাকায় বাটপার নুরা বলে সবাই চিনে।
ছেলের অর্পকর্মের কারনেই ওর বাবা ফয়েজ প্রধানের অকাল মৃত্যু হয় বলে জানান প্রতিবেশীরা।

জয়নাল ও আবুল কালাম বলেন, বিদেশে পাঠানোর কথা বলে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে একাধিকবার সালিস বৈঠক হয়েছে। সুরাহা না হওয়ায় তাঁরা আদালতে মামলা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *