বালু উত্তোলনের অভিযোগদিয়ে বিপাকে কৃষক পরিবার

বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলাসহ গোটা জেলায় অবাধে চলছে বেআইনি ভাবে ফসলি জমি ও খালের ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন। সরকারি, বেসরকারি স্থাপনা ও আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন আইনে নিষিদ্ধ হলেও তা মানছেন না বালুখেকোরা। এই ‘স্যান্ড মাফিয়া’ চক্রের কবলে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা সহ গোটা জেলার ভূমির অবস্থা নাজেহাল । আপাত দৃষ্টিতে জেলার চেহারা ‘উপরে ফিটফাট- ভেতরে সদরঘাট।’ অর্থাৎ, অধিকাংশ এলাকার ভূগর্ভের বালু-মাটি উত্তোলন করে ‘তলাশূণ্য’ করে বিভিন্ন জায়গা উঁচু করে ইমারত সহ রাস্তা নির্মান করছে বালু খেকোরা । বিশেষজ্ঞগণের মতে, ভূগর্ভের বালু উত্তোলন বন্ধ করতে না পারলে যেকোন সময় ভূমি দেবে কিংবা ধসে যাবে। এতে পরিবেশ বিপর্যয় ও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

তেলিগাতী এলাকাবাসী জানান, মোড়েলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের চোমরা, ঢুলিগাতী, মালমগাছা এলজিইডির নির্মিত রাস্তার কাজে রাস্তার পাশের জমি ও খাল থেকে জোর করে ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার এর নেতৃত্বে ঠিকাদার সোহেল কনষ্টাকশন অবৈধ্য ড্রেজারার দিয়ে কাদাবালু উত্তোলন করছে । এই সংবাদের ভিত্তিতে ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার তহশিলদার পাঠিয়ে ড্রেজারারটি জব্দ করে ইউপি সদস্য সোহাগ ও নজরুল ইসলামের জিম্বায় দিয়ে আসে । বুধবার সকাল থেকে আবার সেই ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে ইউপি চেয়ারম্যন ও ঠিকাদার ।

উল্লেখ্য গত ২৯ মার্চ বুধবার এলাকার পক্ষে মোঃ ইয়ারুল শেখ অবৈধ্য বালু বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসকের বরাবর আবেদন করেন । আবেদনের পরে নেমে আসে তার পরিবারের উপর নির্যাতন । বাড়ীতে যেতে পারছেনা ইয়ারুল শেখ । ইয়ারুল শেখ জানান, বুধবার অবৈধ্য ড্রেজার দিয়ে কাদাবালু উত্তোলন বন্ধের জন্য আবেদন করার পরদিন বৃহস্পতিবার সন্ধা ৭ টার দিকে আমার বাড়ীতে হামলা করে ইউপি চেয়ারম্যান এর লোক জনেরা । আমার স্ত্রী খাদীজা বেগমেকে বেদম প্রহার করে জামা কাপড় ছিড়ে ফেলে। আমার ঘেরথেকে মাছ লুটকরে নিয়েছে। আমি বড়ী যেতে পারছি না সন্ত্রসীদের ভয়ে। যে কোন সময় আমাকে মারতে পারে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক দিলীপ কুমার দত্ত বলেন, ভূতলের বালু-মাটি উত্তোলন পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূ-পৃষ্ঠ দেবে যেতে পারে। পরিবেশের বিপর্যয় ঘটতে পারে। এই অবৈধ কর্মকান্ড জরুরিভাবে প্রতিরোধ করা দরকার।

তেলিগাতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার বলেন, আমি কোন বালু উত্তোলনের দায়িত্ব নেয়নি। আমার এলাকার রাস্তার কাজ হচ্ছে আমি চেয়ারম্যান হিসাবে তাদেরকে সাহাস্য করছি।

এবিষয় মোড়েলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, আমরা ইতোমধ্যে অবৈধ্য ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করেছি। ঠিকাদারকে শতর্কতা পত্র দেয়া হয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বরেন, অবৈধ্য ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার কোন সুযোগ নেই। তাতে যেইহোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করাপ হবে। #

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *