নানা অভিযোগের পরও পিয়নের বেতন ছাড় করলেন অধ্যক্ষ ও সভাপতি

নাাটোরের গুরুদাাসপুর রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের ছাত্রীর সাথে পরকীয়ার জড়ানো সেই পিয়ন সাহাদতের বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন, কারণ দর্শানোর নোটিশ বাধ্যতামুলক ২০ দিনের ছুটি গত মাসের বেতন বন্ধ করা সর্বোপরি তিন মাস প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার পরও আবারো বেতন ছাড় দিলেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতি।
এব্যাপারে ওই কলেজের ছাত্রী মিথিলা, মরিয়ম, বনর্যা ও মিতাসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় তাদের কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। তাই তারা ইউএনওর কাছে গিয়েছিলেন কলেজের শাহাদৎ হোসেন নামের একজন চরিত্রহীন লম্পট চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে। ইতিপুর্বেও আমরা ওই পিয়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি অথচ ইউএনও একদিনের জন্যও আমাদের কলেজে তো আসেনি এবং কোনও অভিযোগও শোনেননি বরং ওই চরিত্রহীন লম্পট পিয়নের দরখাস্ত নিয়ে তার পক্ষে কাজ করেছে।
ওই কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুহুল করিম আব্বাসী ও ইসলামী শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সামাদ বলেন, ইতিপুর্বে ওই পিয়ন সাহাদৎ স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় সাত দিন হাজত বাস করে গত দুই মাস যাবৎ কলেজে অনুপস্থিত থেকেও সরকারী বেতনভাতা কিভাবে তুলতে পারে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এসব ঘটনা ভবিষ্যতে ওই পিয়নসহ অন্যান্যদের উৎসাহিত করবে। কলেজের আইন শৃঙ্খলার অবনতি হবে। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ছাত্রীদের লেখা পড়ারও।
কলেজ সুত্রে জানা যায়, ওই কলেজের শাহাদৎ হোসেন (৩২) নামের একজন পিয়ন দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর সাথে কলেজে দায়িত্ব পালন কালে নিজের বিবাহিত স্ত্রী থাকা সত্বেও পরকিয়ায় জড়ায়। শুধু ওই ছাত্রীই নয় একাধিক ছাত্রীর সাথেও তিনি অশ্লীল আচরণ করে। যার কারণে কলেজ কতর্ৃপক্ষ ওই পিয়নের স্ত্রী সীমা খাতুন ও কলেজের ছাত্রীদের অভিযোগের কারণে তার বিরুদ্ধে ৫সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে পিয়ন সাহাদতের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পান। সেই সুত্রে তাকে বাধ্যতামুলক ২০দিনের ছুটি, কারণ দশার্নোর চিঠি এবং গত মার্চ মাসের বেতন স্থগিত রাখেন। অবশেষে ২ এপ্রিল গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায় অধ্যক্ষের মাধ্যমে ছাত্রীদের তার কাযার্লয়ে দেখা করতে বলেন। ওই দিন কলেজের আবাসিক, অনাবাসিক ৭২জন ছাত্রী অভিযোগ নিয়ে ইউএনওর কার্যালয়ে গেলে বেশি ছাত্রী দেখে তাদের সাথে সাক্ষাত না করে চলে যেতে বলেন। এতে ওই ছাত্রীরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে ইউএনওর কাযার্লয় ত্যাগ করেন।
ওই কলেজের অধ্যক্ষ মাহাতাব উদ্দিন জানান, কলেজ গভার্ণিং বডির সভাপতি ও উপজেলা নিবাহী অফিসার শ্রাবণী রায়ের কাছে যাবতীয় নথি দাখিল করে তার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সকল প্রক্রিয়া সম্পুর্ণ করে পিয়ন সাহাদতের বেতন ভাতাদি সাময়িক বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু সামান্য ত্রুটি থাকায় বেতন ছাড় দিতে হচ্ছে। পরবর্তীতে বিধি অনুসারে ব্যাপারটা দেখা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায়কে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি তা না ধরে কেটে দেন।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *