মুরাদনগরে সীমানা প্রাচীরে অবরুদ্ধ মাদ্রাসার শতাধীক শিক্ষার্থীসহ ২ পরিবার

বাংলাদেশের গ্রাম সমাজের মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐতিহ্যগতভাবেই সবাই মিলে মিশে থাকে। বিপদে-আপদে পরস্পরে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় দেখা গেছে- এর উল্টো। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের উত্তর বাখরাবাদ গ্রামের মাইনুদ্দিন নামের এক ব্যাক্তি স্থানীয় প্রভাবশালীদের ইন্দনে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করায় প্রতিবেশী একটি মাদ্রাসা ও দুইটি পরিবার বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মাদ্রাসার শতাধীক শিক্ষার্থী ও দুইটি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মই দিয়ে ৭ ফুট উচু সীমানা প্রাচীর অবরুদ্ধ শিক্ষার্থী ও পরিবারের লোক জন পারাপার করছে। ফলে শিক্ষার্থী ও এসব পরিবারের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের জন্য এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও নিরুপায় হয়ে বাড়ির বয়স্ক নারী-পুরুষদের সাথে তারাও অবরুদ্ধ রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও ঘর হতে বের হতে পারছে না। গবাদী পশুগুলো নিয়ে পড়েছে বিপাকে।
প্রায় ১ মাস পেরিয়ে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোন প্রদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছে, প্রত্যেকেরই যার যার বাড়ি নিরাপত্তায় বেষ্টনীর প্রয়োজন আছে, তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসবাসকারীদের যাতায়াতের পথ বন্ধ করে এটা কারো কাম্য নয়।
ভুক্তভোগী রাবেয়া বসরী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাফেজ নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বি চাপিতলা গ্রামের মরহুম হাজী আব্দুর রহমান ২০১৮ সালে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তাটি মৌখিক ভাবে দিয়ে যান। কিন্তু তার মৃত্যুর পর ছেলে মাইনুদ্দিন মাদ্রাসা ও প্রতিবেশিদের যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। স্থানীয় চেয়ারম্যান ইকবাল সরকারের কাছে বেশ কয়েকবার গেলেও তিনি ২ বছর ধরে আমাকে ঘুড়াচ্ছেন। ২ বছর পূর্বে তার বাড়িসহ জমি কেনার প্রস্তাব দেন এরা, ক্রয় করতে রাজি না হওয়ায় সীমানা প্রচীর নির্মাণ করে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও রামচন্দ্রপুর রামকান্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক কবির আহমেদ ভূইঁয়া আক্ষেপ করে বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন যাবত এখানে বসবাস করছি এবং বসবাসের শুরু থেকেই ওই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে আসছি। হঠাৎ করে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেওয়া আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি।
সীমানা প্রাচীর নির্মান কারি মাইনুদ্দিন বলেন, প্রাচীর নির্মান করে আমি কোন অপরাধ করিনি। আমার জমিতে আমি প্রাচীর নির্মান করেছি। আর এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাইনা।
রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল সরকার বলেন, বেশ কয়েকবার আমি চেষ্ঠা করেছি স্থানয়ি ভাবে মিমাংসা করা জন্য কিন্তু জমির মালিক মাইনুদ্দিন তার জমির উপর দিয়ে সড়ক দিতে রাজি হচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দিন ভুইয়া জনী জানান, অবরুদ্ধ বিষয়টি আমি শুনেছি এবং তাৎক্ষনিক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেছি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করে দেওয়া জন্য। এর পরও ভুক্তভোগীরা আদালতের সহযোগিতা নিতে পারেন।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *