কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে নিভৃত পল্লী অঞ্চলে গড়ে উঠেছে মিনি তাঁত শিল্প কারখানা।সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সেই মিনি তাঁত মেশিনের খট খটানি শব্দে মুখরিত পুরো গ্রাম এলাকা।সেখানে সুন্দর সুন্দর গামছা তৈরি করে নজর কাড়ছে এলাকাবাসী সহ দর্শনার্থীদের।উৎপাদন বাড়াতে এই মিনি কারখানায় যন্ত্রচালিত পাওয়ার লুম দিয়ে গামছা তৈরি করা হয়।
কারখানার মালিক শহিদুল্লাহ সামনে বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ ও পবিত্র ঈদুল ফিতর কে সামনে রেখে কর্ম ব্যস্ত হয়ে পরেছে।
উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের সিমান্তঘেঁষা গজের কুটি গ্রামে এই মিনি তাঁত শিল্পটি দেখতে গিয়ে জানাযায়,ওই এলাকার কৃষক মোঃ আমির হোসেন ছেলে মোঃ শহিদুল্লাহ দীর্ঘদিন তাঁত শিল্প কারখানায় কাজ করতেন তার স্বপ্ন ছিল বাড়িতে ফিরে গিয়ে ছোটকরে হলেও নিজেই কারখানা তৈরি করবে তার স্বপ্ন পুরণের লক্ষ্যে নিজ বাড়ির উঠানে ছোট্ট একটি টিন সেটের ঘরে এই মিনি তাঁত শিল্প কারখানাটি গড়ে তোলেন ।প্রথমত তিনি গামছা তৈরি করছেন একমাসে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তার এই মিনি তাঁত শিল্প কারখানাটি দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে আসা মানুষের ঢল নেমেছে যেন গজের কুটি গ্রামে। সেখানে গামছা তৈরি করা সময় এক নজর দেখার জন্য এলাকাবাসী সহ অন্যান্য এলাকায় মানুষের ঢল নামে।তাঁত সমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে তাঁতপল্লি গড়ে উঠার লক্ষ্যে শুধু প্রথম পর্যায়ে গামছা তৈরি করছেন উদ্যেক্তা শহিদুল্লাহ।কারখানায় উৎপাদিত গামছার কদর বাড়ছে গোটা উপজেলা জূরে।
স্থানীয় বাসিন্দা বুলবুল ইসলাম,অতুল চন্দ্র রায় ও রফিকুল ইসলাম গংরা বলেন,আমরা যতটুকু জানি, তাঁত কারখানার মালিক শহিদুল্লাহ খুব পরিশ্রমী ছেলে টানা ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত জীবন জীবিকার তাগিদে দেশে বিদেশে বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ কর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শুনেছি সে তাঁত কারখানায় কর্মচারী হিসেবে অনেক দিন কাজ করেছেন।ছোট বেলা থেকেই শহিদুল্লাহ ছিল কঠিন পরিশ্রমী ছেলে। তার স্বপ্ন ছিল বাড়িতে ফিরে গিয়ে সে নিজেই একটি কারখানা তৈরি করবে এবং একজন সফল উদ্যোক্তা হবে ব্যাস ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় তার অদম্য ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন একটি মিনি তাঁত শিল্প কারখানা। হয়ে যান নিজে কারখানার মালিক এখন প্রতিদিনই তার কারখানায় গামছা তৈরি হচ্ছে বাজারজাত হচ্ছে গোটা উপজেলায় খবর ছড়িয়ে পরছে।তার স্বপ্ন পুরণের লক্ষ্যে গত এক মাস যাবৎ তিনি গামছা তৈরি করছেন শতশত মানুষ কারখানা দেখতে যাচ্ছেন।আবার কেউবা স্বল্প মূল্যে গামছা ক্রয় করছেন।
তাঁত কারখানার মালিক শহিদুল্লাহর সাথে কথা বলে জানাযায়, অনেক স্বপ্ন নিয়ে কারখানাটি শুরু করেছি।আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা কামনা করছি।এই কারখানাটি শুরু করতে দুইটি পাওয়ার লুম(মেশিন) সিরাজগঞ্জ থেকে ২লক্ষ্যে ৬০ হাজার টাকায় ক্রয় করি নিয়ে আসা ক্যারিং খরচ আরো ১৫ হাজার টাকা লাগে।সেখান থেকে প্রায় ৭০হাজার টাকার সুতা ক্রয়করি,ঘড় তৈরী করতে ৩৫ হাজার,অন্যান্য খরচ আরো ২০হাজার টাকা সহ সর্বমোট প্রায় ৪লক্ষ্যে টাকা ব্যয়ে তার স্বপ্নের তাঁত শিল্প কারখানাটি চালু করেন। তবে বড় পরিতাপের বিষয় তার মূলধন ছিল মাত্র ১ লক্ষ্যে টাকা বাকি টাকাটা তিনি বিভিন্ন সংস্থা বা ইনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন।তিনি সহ আরো দুইজন তাঁত শ্রমিক সহ গত একমাস থেকে গামছা তৈরি করে আসছেন।
উদ্যোক্তা শহিদুল্লাহ আরো জানান, তৈরি করা গামছা গুলো স্থানীয় বাজারে পাইকারি হিসেবে এক থান( ৪পিচ গামছা) ৪২০থেকে ৪৪০টাকায় বিক্রি করছেন। এই মাসে ৭০থেকে৮০ হাজার টাকার গামছা বিক্রি করছেন। তিনি এও বলেন সব খবর দিয়ে টিয়া মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হয় আরকি। পরিশেষে তিনি বলেন, বড় ধরনের ব্যাংক ঋণ পেলে কারখানাটি বড় পরিসরে করে যেমনি ভাবে আয় বাড়ানো যেতো তেমনি ভাবে আমাদের এই অবহেলিত এলাকার কিছু বেকার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতো।
এব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনাব সুমন দাস জানান,মিনি কারখানা হলেও ফুলবাড়িতে তাঁত শিল্পের মাধ্যমে গামছা তৈরি হচ্ছে এটা খুবই ভালো উদ্যোগ।তিনি ব্যক্তিগত ভাবে ওই উদ্যোক্তাকে স্বাগত জানান। পাশাপাশি তিনি জেলা বিসিক শিল্প নগরীর মাধ্যমে প্রোণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দেন।