সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় চীন থেকে আসলো আরো ২০ রেলকোচ

পদ্মা সেতুতে রেল সংযোজন করা হয়েছে। ওই সেতুতে চলাচলের জন্য আরো ২০টি আমদানি করা রেল কোচ আনা হয়েছে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। কারখানায় এগুলো করা হচ্ছে পরীক্ষা নীরিক্ষার কাজ। এর আগে কারখানায় এসেছে ১০টি কোচ। মোট ৩০টি রেল কোচ এখন পরীক্ষা করা হচ্ছে সৈয়দপুর কারখানায়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এসব কোচ রেলের ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ কোচগুলো কোচগুলো পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, চীনা রেলওয়ের রোলিং স্টক কর্পোরেশন থেকে ১০০টি কোচ আমদানি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রথম চালান ৪০ টির মধ্যে ৩০ কোচ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় এসেছে। তা চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ। কোচগুলো চীনের সিআরআরসি ট্যাংসন কোম্পানিতে তৈরি। তবে এর অনেক যন্ত্রাংশ জার্মানি ও রোমানিয়া থেকে এসেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এসব কোচের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে পরবর্তী চালানের কোচগুলো ওই কারখানায় চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
২৬ ফেব্রুয়ারি রোববার সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপ ইয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, চীনা প্রকৌশলীরা স্থানীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে কোচগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করছে। কোচগুলোর অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা (ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন) বেশ আধুনিক। আরামদায়ক আসনগুলোতে রয়েছে ফোল্ডিং ব্যবস্থা। আছে ল্যাপটপ ও মোবাইল চার্জ দেয়ার পয়েন্ট। এ ছাড়া ডিজিটাল মনিটর ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে প্রতিটি কোচে। কোচের টয়লেটগুলোও পরিবেশবান্ধব। হাই কমোড ও লো-কমোডের ব্যবস্থা আছে। কোচগুলো জাতীয় পতাকার আদলে লাল-সবুজে রাঙানো।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজসপের প্রধান ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম জানান, চীন থেকে আমদানি করা কোচগুলোর মধ্যে কারখানায় এ পর্যন্ত ১২টি শোভন, ৬ টি এসি স্লিপার, ৬ টি এসি চেয়ার, ৩ টি পাওয়ার কারসহ ৩০টি কোচ এসেছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে ওই ট্রেনে ভ্রমণ হবে আরামদায়ক। আগে আসা ১০ টি কোচের পরীক্ষ-নীরিক্ষা শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ চলছে৷ এ কাজে রেল কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তার পাশাপাশি চীনা বিশেষজ্ঞরা কাজ করছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী (সিএমই) তাবাসসুম বিনতে ইসলাম বলেন, ‘ চীন থেকে আসা কোচগুলো পদ্মা সেতুতে চলাচলের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় প্রস্তুত করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলবে আগামী জুন মাসের মধ্যে। ওই রুটে রেল ভ্রমণে যাত্রীরা আধুনিক সেবা পাবেন, যা নতুন এক অভিজ্ঞতা হবে।’
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান বলেন, চীন থেকে আনা কোচগুলোর মধ্যে তিন দফায় ৩০ টি কোচ এ কারখনায় এসেছে। আমরা সেই কোচগুলোকে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। আমাদের হাতে যথেষ্ট সময় আছে। কাজেই এ নিয়ে তেমন কোনো চাপ নেই। খুব শিগগির এসব কোচের ট্রায়াল রান হবে।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *