নীলফামারীতে হত্যা মামলার ৫ আসানী পলাতক

নীলফামারীর দীঘলডাঙ্গীতে ফোনে ডেকে নিয়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে।পরে তার লাশ বাড়ীর পাশে একটি জিগা গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রাতেদীঘলডাঙ্গী গ্রামে।
এ ব্যাপারে মৃতের মা বাদী হয়ে নীলফামারী আদালতে ৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। বর্তমানে সকল আসামী পলাতক রয়েছে।
মামলার বাদী পারভীন বেগম জানান,তার ছেলে মাসুদ মন্ডল বাড়ীর পাশে একটি বিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিত। পড়াশোনায় সে অনেক ভাল। তাই বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ গ্রামের মানুষ তাকে খুবই ভালবাসতো। সংসারে অভাব অনটন থাকায় লেখাপড়ার পাশাপাশি সে অন্যের বাড়ীতে কামলার কাজ করতো। যে টাকা পেত তার পুরোটাই মায়ের হাতে তুলে দিত। বাড়ীর পাশে সম্পদশালী শাহিনুর রহমান ছিল তার বন্ধু। মাঝে মধ্যে তাদের বাড়ীতেও সে দিনমজুরের কাজ করতো। খুব কষ্ঠ করে সে লেখাপড়া করতো। বন্ধু শাহিনুরের স্ত্রী গত ১৬ ডিসেম্বর বাবার বাড়ীতে চলে যায়। রাতে ওই বন্ধু মাসুদ মন্ডলকে সাথে নিয়ে তার বাসায় রাত কাটায়। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর রন্ধুর স্ত্রী বাড়ীতে ফিরে আসে। ওইদিন রাতে আবার বন্ধু শাহিনুর মোবাইল করে মাসুদকে রাতে তার বাসায় ডেকে নেয়। রাতে মাসুদ বাসায় না আসায় বাসার লোকজন খুঁজতে যায় শাহিনুরের বাসায়। তবে সে সময় তাদের বাসার সকল দরজা ছিল বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করেও তাদের কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয় পুরো পাড়ায়। সকলে মিলে মাসুদকে খুঁজতে শুরু করে। এক পর্যায় মাসুদকে পাওয়া ছোট একটি জিগা গাছের সাথে বেঁধে রাখা অবস্থায়। তখন মাসুদকে হত্যা করে ওই জিগা গাছে রাখা হয়। লাশ দেখতে পাড়ার হাজার হাজার মানুষ ভীড় করে।
এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আসামী পক্ষ রাতে লাশ দাফনের চেষ্টা করে। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান এতে বাঁধা দেন। ফলে লাশ দাফন বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি জানানো হয় থানা পুলিশকে। পরে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় শাহিনুর,বিলকিস,শামীম মন্ডল,সাহিদা ও শাহিন ইসলামকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা পলাতল হয়েছে। মামলা করায় আসামীরা বাদীকে নানাভাবে প্রাণ নাশের হুমকী দিয়ে আসছে। তারা মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। এলাকার প্রভাবশালি হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে সাহস পায় না। এদিকে ছেলেকে হারিয়ে মা প্রায় পাগল হয়ে গেছে। ছেলে হত্যার বিচার চান তার মা।

Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *