ন্যায্য মূল্য না থাকায় গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন লালমনিরহাটের কৃষকগণ

বাজারে গমের ন্যায্য মূল্য না থাকা ও সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি করতে না পারায় এবং কৃষি উপকরনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গম আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন লালমনিরহাট জেলার সাধারন কৃষকগণ। অনেক কৃষক গম চাষ থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। গমের স্থলে ভুট্টা, আলুসহ অন্যান্য ফসলের চাষাবাদে ঝুঁকছেন তাঁরা।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট একসময় গম উৎপাদনে এগিয়ে থাকলেও এখন লোকসান হওয়ায় গম আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন জেলার চাষীরা। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত গম সরকারের খাদ্যগুদামে বিক্রি করতে পারেন না। এমন নানা কারণে গম আবাদ করা থেকে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন এ অঞ্চলের চাষীরা।
এক সময় এই লালমনিরহাট জেলায় কৃষকরা তাদের জমিতে ধান, ভুট্টা, সরিষাসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি অনেক জমিতে গম আবাদ করতেন। কিন্তু এখন আর আগের মতো গম আবাদ হয় না আর গম আবাদের জমিও চোখে পড়ে না। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতির কারণে অল্প জমিতে বেশী ফসল উৎপাদন করা গেলেও গম চাষে দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছে চাষিরা। এর কারন হিসেবে কৃষকগণ বাজারে গমের ন্যায্য মূল্য না থাকা ও সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি করতে না পারায় এবং কৃষি উপকরনের দাম বৃদ্ধি পাওয়াকে দায়ী করেছেন।
জেলার মহেন্দ্রনগরের কৃষক রহিম উদ্দিন ডেইলি বাংলাদেশকে জানান, গম চাষ করে খরচ ওঠে না, তাছাড়াও বাজারে গমের থেকে ধানের চাহিদা বেশি, গমের থেকে ধানের দামও বেশি। তাছাড়া সরকারি ভাবেও যথা সময়ে গম কেনা হয় না। খাদ্যগুদামে সরকারিভাবে গম কেনার তালিকায় প্রকৃত কৃযকদের নাম থাকে না। সরকারের গম সংগ্রহে মাঠের কৃষকরা গম দিতে পারে না। সরকার গম কেনার জন্য বেশী দাম দিলেও এর সুফল পায় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। তাই গম চাষে তেমন আগ্রহ নেই এ জেলার কৃষকদের।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান ডেইলি বাংলাদেশকে জানান, কৃষকরা সব ধরনের ফসলই চাষ করছেন। প্রতিবছরই এ জেলায় ভালো ফলনও হচ্ছে। এর কারণ সরকার কৃষকদের পাশে রয়েছে। কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কৃষকরা যখন উৎপাদিত পন্যের দাম কম পান তখন একটু সমস্যা হয়।
এ বছর লালমনিরহাট জেলায় লক্ষমাত্রার চেয়ে ৯শত ১৭ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ কম হয়েছে বলেও জানান তিনি।
Print Friendly, PDF & Email

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *